আবুল হাসানাত মোহাম্মদ আবদুল হাই (১৯০১–২৯ নভেম্বর ১৯৮৩) বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান আলেম, রাজনীতিক, সমাজ সংস্কারক ও লেখক ছিলেন তিনি ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ ভারতের বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি পূর্ববংগীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য ছিলেন। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টারি বোর্ডের চীপ হুইপ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি পূর্ববঙ্গীয় মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি তার বাড়ির সামনে হাতিয়া দারুল উলুম কামিল স্নাতকোত্তর মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
আবুল হাসানাত মোহাম্মদ আব্দুল হাই ১৯০১ সালে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৌলবি আব্দুল গণি বরিশাল সরকারি জেলা স্কুলের আরবী-ফারসীর শিক্ষক ও ভারতের মেদিনীপুর সরকারি জেলা স্কুলের হেড মৌলবী ছিলেন। মাতা আফিফা খাতুন স্থানীয় মুক্তবে ধর্মশিক্ষা দিতেন।
১৯২৮ সালে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাস করে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেন।
আবুল হাসানাত মোহাম্মদ আব্দুল হাই কর্মজীবনের শুরুতে ১০ বছর রামগতির নূরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা ও হাতিয়ার আফাজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনি হাতিয়া, সন্দ্বীপ ও রামগতির কাজীর দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ছিলেন মাওলানা আবদুর রব জৌনপুরীর মুরীদ ও খলিফা। কিছু দিন তিনি বাংলা ও আসামে ধর্মপ্রচারের কাজেও নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৪৬ সালে তিনি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামে 'দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসা' নামে একটি কামিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৫৫ সালে মক্কা নগরীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব মুসলিম সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি ১৯৬২ সালে বাগদাদ ও আল্কিন্দি নগরীর সহস্র তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য একমাত্র রাজনীতিক যিনি পাকিস্তান থেকে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।
আবুল হাসানাত মোহাম্মদ আব্দুল হাই ছাত্রজীবনেই বঙ্গীয় স্টুডেন্টস মুসলিম লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ছিলেন। অন্যান্য মুসলিম লীগ নেতার ন্যায় তিনিও ব্রিটিশ সরকারের সমর্থক ছিলেন।
১৯৪৬ সালে তিনি ব্রিটিশ ভারতের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নোয়াখালী দক্ষিণ এলাকা থেকে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। জুলাই ১৯৪৭ সালে অনুষ্ঠিত সিলেটের গণভোটে তিনি পাকিস্তানের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালণ করেন।
১৯৫৪ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে তিনি মুসলিম লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পূর্ববাংলা এসেমব্লির (পূর্ববংগীয় প্রাদেশিক আইনসভা) সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে তিনি পূর্ববঙ্গীয় মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খাঁ কর্তৃক সামরিক আইন জারি পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তানের আইন পরিষদের সদস্য ছিলেন।
১৯৬২ সালে মুসলিম পারিবারিক আইন প্রণয়ন কমিটির তিনি সদস্য ছিলেন। ১৯৬৩ সালে তিনি পাকিস্তান সরকারের ইসলামিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচনে তিনি মুসলিম লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নোয়াখালী থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টারি বোর্ডের চীপ হুইপ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি পদে নিয়জিত করা হয়।
তিনি ১৯৬৮ সালে রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
মৃত্যু
আবুল হাসানাত মোহাম্মদ আবদুল হাই ২৯ নভেম্বর ১৯৮৩ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাকে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
info@isabahbd.com
01326344768
+01326344768
347, Concept Tower, Panthapath, Dhaka
Copyright © 2023 All rights reserved | This application is made by ZOOM IT