শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম এর পরিচয় জানতে চেয়েছেন অনেক ভাই। তাদের জন্যই মূলত এই পোস্টটি
.
ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম। আরব-বিশ্বের খ্যাতনামা লেখক, গবেষক ও দায়ি। জন্মেছেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে ১২০ কি.মি. উত্তরে অবস্থিত ‘বীর’ নগরীতে—বিখ্যাত আসিম বংশের কাসিম গোত্রে। তাবলিগে দ্বীন ও ইলমে নববির চর্চা ও প্রসারে এই গোত্রের ব্যাপক অবদান রয়েছে। তাঁর দাদা শাইখ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মদ বিন কাসিম আল-আসিমি আন-নাজদি রহ. ছিলেন হাম্বলি মাজহাবের প্রখ্যাত ফকিহ। নাহু, সরফ, আকায়েদ, তাফসির, হাদিস, ফিকহ ও উসুলে ফিকহ-সহ বিভিন্ন শাস্ত্রে তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য মূল্যবান গ্রন্থ। ‘হাশিয়াতুর রাওজিল মুরবি’ ‘হাশিয়াতু কিতাবিত তাওহিদ’ ও ‘আদ-দুরারুস সানিয়াহ ফি আজওয়িবাতিন নাজদিয়াহ’ তার বিখ্যাত রচনা।
.শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম এর পিতা শাইখ মুহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান রহ.ও ছিলেন আরবের যশস্বী আলেম ও বহু গ্রন্থপ্রণেতা। বিভিন্ন দ্বীনি শাস্ত্রে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল সর্বজনবিদিত। তাঁর দাদা ও পিতার সম্মিলিত অমর কীর্তি শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়ার রচনা ও ফতোয়ার সংকলন ও বিন্যাস—‘মাজমুউ ফাতাওয়া শাইখিল ইসলাম’। মিসর, ইরাক, লেবানন, সিরিয়া ও ইউরোপসহ বহু দেশের বহু প্রাচীন গ্রন্থাগার চষে সংকলিত পিতা-পুত্রের ত্রিশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের সোনালি ফসল ৩৭ খণ্ডের বিশাল এই গ্রন্থ মুসলিম উম্মাহর অমূল্য সম্পদ।
.
শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম জন্ম সূত্রেই পেয়েছিলেন প্রখর মেধা, তীক্ষ্ণ প্রতিভা আর ইলম অর্জনের অদম্য স্পৃহা। পরিবারের ইলমি পরিবেশে নিখুঁত তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছেন খ্যাতনামা এই লেখক। আনুষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করে আত্মনিয়োগ করেন লেখালেখিতে—গড়ে তোলেন ‘দারুল কাসিম লিন নাশরি ওয়াত তাওজি’ নামের এক প্রকাশনা সংস্থা। প্রচার-বিমুখ এই শাইখ একে একে উম্মাহকে উপহার দেন সত্তরটিরও অধিক অমূল্য গ্রন্থ। তাজকিয়াহ ও আত্মশুদ্ধি বিষয়ক বাইশটি মূল্যবান বইয়ের সম্মিলনে পাঁচ ভলিউমে প্রকাশিত তাঁর ‘আইনা নাহনু মিন হা-উলা’ (সালাফের পথ ছেড়ে কোথায় আমরা?) নামের সিরিজটি পড়ে উপকৃত হয়েছে লাখো মানুষ। উর্দু, পশতু, তুর্কি, বাংলা ও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই সিরিজের অনেকগুলো বই। ‘আজ-জামানুল কাদিম’ নামে তিন খণ্ডে প্রকাশিত তার বিখ্যাত গল্প-সংকলনটিও আরব-বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি প্রাঞ্জল ভাষায় ছয় খণ্ডে রচনা করেছেন রিয়াজুস সালিহীনের চমৎকার একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এছাড়াও তাঁর কুরআন শরিফের শেষ দশ পারার তাফসিরটিও বেশ সমাদৃত হয়েছে।
.
আমরা আল্লাহর দরবারে শাইখের দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।